৩০টি ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প - ইসলামিক শিক্ষনীয় ঘটনা
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প গুলো আমাদের পূর্বের ইসলামিক জীবনধারা সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়। ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম আর ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্পগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রত্যেকে নিষ্ঠাবান হতে পারেন। ইসলামিক শিক্ষনীয় ঘটনা পূর্বের দিনের রীতিনীতি, নিষ্ঠা, আইন কানুন, ধার্মিকতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়। আজকের আর্টিকেলটিতে ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প কাহিনী ও ছোট গল্প তুলে ধরেছি।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প আমাদের জীবনধারাকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। ইসলামিক জ্ঞান, ধারণা বৃদ্ধি করে। ইসলামিক গল্পগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাস্তব জীবনে ইসলামিক ভাবে জীবন যাপন করা যায়। তাই ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্পগুলো নিচে দেওয়া হয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প - ইসলামিক শিক্ষনীয় ঘটনা
.
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোটগল্প ।। দরিদ্র ব্যক্তির দান।।
একদা এক বৃদ্ধ দরিদ্র ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ায় তিনি খেতেও পেতেন না। তার কাছে কোন নিজস্ব সম্পদ ছিল না। তেমন কোন অর্থ ছিল না। তার কাছে জমানো ছিল অল্প কিছু টাকা যা খুবই কম। এই টাকা দিয়ে তিনি নিজের খাবার কিনে খেতেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত অসহায় ও দরিদ্র। একদিন তিনি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেন।
এমন সময় আরো একজন অসহায় ও দরিদ্র ব্যক্তি কিন্তু তিনি যুবক মসজিদে আসলেন সাহায্য চাইতে। বৃদ্ধ-দরিদ্র ব্যক্তি যুবকের দিকে দেখে মায়া হল। তার খাবার খাওয়ার জন্য জমানো কিছু টাকা যুবকটিকে দিয়ে সাহায্য করলো। দরিদ্র বৃদ্ধটি যখন যুবকের হাতে টাকা দিয়ে সাহায্য করতে যাবে এমন সময় যুবকটি কেঁদে উঠলো।
বলল আপনি এত দরিদ্র ও বৃদ্ধ তবুও আপনি আমাকে সাহায্য করছেন, আর আমি সুস্থ সবল ও যুবক, কিন্তু আমি সাহায্যের জন্য আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আজকে থেকে আর কখনোয় কারোর কাছে সাহায্য চাইবো না নিজে পরিশ্রম করব। আপনি বৃদ্ধ হয়ে যদি কাজ করে নিজে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। আমি যুবক হয়ে কেন পারব না।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ অন্যের কাছে কখনোয় হাত পেতে সাহায্য চাওয়া উচিত নয়। মূলত ভিক্ষা করা উচিত নয়। ভিক্ষা আল্লাহর কাছে অপছন্দের। তাই আপনি যদি সুস্থ সবল হন সেক্ষেত্রে পরিশ্রম করুন নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনার পরিশ্রমে বরকত দিবেন।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোটগল্প ।। বুদ্ধিমান কৃষকের বিশ্বাস।।
এক গ্রামে এক গরীব কৃষক বাস করত। কৃষকটি ছিল অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ। তিনি মনে প্রাণে আল্লাহকে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু তিনি ছিলেন অনেক গরিব। তার আবাদি এক টুকরো জমি ছিল। যা ছিল অনেক কম। তিনি সে এক টুকরো জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে আশা দুঃখ কষ্ট বেদনা গুলো দোয়া করতেন।
একবার প্রচন্ড পরিমাণ খরা শুরু হল। কোন কৃষকের জমিতেই ফসল ফলছিল না। অন্য সব কৃষকেরা প্রচন্ড খরা দেখে কোন কিছু রোপন ও বপনও করেনি। কেননা প্রচন্ড খরায় কোন ফসল জন্মাবে না। অতিরিক্ত খরায় সব ফসলপুরে নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু বুদ্ধিমান কৃষক হাত গুটিয়ে না বসে থেকে তার একটা করে জমি চাষাবাদ করল।
এরপর সেখানে গম বীজ বুনলো। সবাই তার চাষাবাদ করা ও পরিশ্রম করা দেখে তাকে পাগল ভাবতে শুরু করলাম। কেননা অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও প্রচন্ড খরাতে কোনভাবেই ফসল ফুলতে পারে না তাই। কিন্তু বুদ্ধিমান কৃষকটি বীজ বপন করার পর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। তার মনে প্রাণে বিশ্বাস ছিল আল্লাহ নিশ্চয়ই একদিন বৃষ্টি দিবেন আর সেখান থেকে তার ফসল ফলবে।
তার গম বীজ বোনার কয়েকদিন পরেই বৃষ্টি হলো। তার প্রত্যেকটি গম বীজ থেকে চারা গজালো এবং তরতর করে বড় হওয়া শুরু করলো। কৃষকটি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলেন। অন্য সবাই তার দিকে দেখে অবাক হয়ে গেল। কেননা সে সময় বীজ বপন করার সময় পেরিয়ে গিয়েছিল।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা রাখুন কখনো নিজে হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। যদি হাত গুটিয়ে বসে থাকেন সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ ও ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন পরিশ্রম করুন। পরিশ্রম করলে নিশ্চয়ই আল্লাহ সেখানে ভালো ফলাফল দেবেন। হাত গুটিয়ে বসে থাকলে বাকি কৃষকের মত আপনাকেও পরে পস্তাতে হবে।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোটগল্প ।। ধৈর্যের উপহার।।
এক যুবক অনেক লেখাপড়া করেছে কিন্তু কোন চাকরি পাচ্ছে না। চাকরির অভাবে দীর্ঘদিন বেকার থেকেছে। কিন্তু যুবকটির ইচ্ছে ছিল সে অনেক সম্পদশালী হবে, অনেক অর্থবান হবে। কিন্তু কিভাবে হবে তার কোন চাকরি নেই, কিভাবে রোজগার করবেন কোথা থেকে টাকা ইনকাম করবে। যুবকটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো এবং আল্লাহকে মনে মনে বিশ্বাস করতো।
আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যাতে আল্লাহ তাকে প্রচুর টাকা উপহার হিসেবে দেন। কিন্তু তার ধৈর্য্যে কিছু কমতি ছিল। তিনি ওর ধৈর্য ছিলেন মাঝে মাঝে ধৈর্য হারিয়েও ফেলতেন নিশ্চয়ই তিনি কখনো আয় রোজগার করতে পারবেন না, তার স্বপ্নগুলো পূর্ণ হবে না। মাঝে মাঝে সে মনে মনে আল্লাহর উপর রাগও করতেন। কিন্তু তিনি আল্লাহর ইবাদত করে যেতেন।
এভাবে বেশ কিছু বছর যাওয়ার পর তার কোন ভাবে চাকরি হচ্ছিল না। জীবিকা নির্বাহের সন্ধানে তাকে নিশ্চয়ই কিছু করতে হবে। একদিন সে মনে মনে ভাবলো সে একটি দোকানে কাজ করবে হোক সেটা যে কোন দোকান। কিন্তু তার মনে অনেকটাই লজ্জাবোধ হচ্ছিল। কেননা সে এতগুলো লেখাপড়া করার পর অন্যের দোকানে কাজ করবে বিষয়টা কেমন দেখাবে।
কিন্তু জীবিকা নির্বাহের সন্ধানে অবশ্যই তাকে পরিশ্রম করতে হবে। তাই সে একদিন এক কাপড়ের দোকানে কাজের সন্ধান করছিল, এরপর সে কাজ পেয়েও গেল। কাপড়ের দোকানের লোকটি ছিল বৃদ্ধ, সে লোকটিকে সে চাচা বলে ডাকতো। এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে গেল। যুবকটি তার দোকানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো সে ছিল সৎ, পরিশ্রমী, নামাজী।
কয়েক বছর পর বৃদ্ধ ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে গেল বৃদ্ধ ব্যক্তিটি যুবককে ডেকে বলল আমার কোন ছেলে সন্তান নেই, আমার স্ত্রী মারা গেছে, শুধু আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। তুমি দীর্ঘদিন আমার দোকানে কাজ করেছ, তোমার সততায় আমি মুগ্ধ আমি চাই তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে কর। যুবকটি কখনো ভাবতে পারেনি সে এমন একটা পরিবারে বিয়ে করতে পারবে।
সেই বৃদ্ধ লোকটির কথা রাখল এবং তার মেয়েকে বিয়ে করল। কয়েক বছর পর বৃদ্ধ লোকটি মারা গেল, সে কাপড়ের দোকানের মালিক হয়ে গেল। পরবর্তীতে বৃদ্ধের থাকা সকল সম্পদ যুবকটি দেখাশোনা করতে লাগলো এবং প্রচুর সম্পদের মালিক হলো। যুবকটি যতখানি আল্লাহর কাছে চেয়েছিল তার চাইতে কয়েক গুণ বেশি সে পেল যা কখনো সে কল্পনাও করেনি।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ আমাদের কখনোই অধৈর্য বা ধৈর্য হারানো উচিত নয়। কখনো হাত গুটিয়ে বসে না থেকে পরিশ্রম করা উচিত। নিশ্চয় পরিশ্রম করতে গিয়ে কখনো না কখনো আল্লাহ প্রত্যেকেই সফলতা দেন। সেটা যে কোন কিছুর মাধ্যমে হতে পারে। তবে ধৈর্য রাখতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে, ইবাদত করতে হবে।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোটগল্প ।। ঈমানদার ব্যাক্তির প্রতি আল্লাহর রহমত।।
একদা এক ব্যবসায়ী ছিল, ব্যবসায়টি ছিল অত্যন্ত সৎ। ব্যবসায়ীটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন সৎ ভাবে ব্যবসা করতেন। অসহায় ও দরিদ্র ব্যক্তিদের সাহায্য সহযোগিতা করতেন। তিনি প্রচুর অর্থ ও বড় ব্যবসায়ী ছিলেন না কিন্তু অসহায় ব্যক্তিদের সহযোগিতা ও সাহায্য করতেন। অন্যান্য ব্যবসায়ীরা তার চেয়ে অনেক বেশি টাকার খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করত,
কিন্তু তার মত অসহায়দের সাহায্য সহযোগিতা করত না। তবে তিনি তাতেই সন্তুষ্ট ছিলেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যাতে তিনি হালাল রিজিক আয় করতে পারেন। তার দোকানে প্রতিদিন অসহায় ব্যক্তিরা আসা শুরু করল। অসহায় ব্যক্তিদের তিনি অল্প কিছু পরিমাণ করে খাবার ও খাদ্যদ্রব্য দিয়ে সহযোগিতা করতেন কিন্তু কোন টাকা নিতেন না।
এভাবে বেশ কয়েক বছর পেরিয়ে গেল। হঠাৎ করে একদিন একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আসলেন তার সাথে দেখা করতে। তিনি ব্যবসায়ীকে বললেন আমি অনেক দূর থেকে এসেছি। আমার একটি প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আছে। আমি শুনেছি আপনি অনেক দয়ালু মানুষ, আপনি অসহায় দরিদ্রদের সাহায্য সহযোগিতা করেন,
খাবার ও খাদ্যদ্রব্য দিয়ে কিন্তু কোন টাকা নেন না। আমি চাই আপনার কাছ থেকে খাদ্যদ্রব্য কিনতে। আমার এই কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের যা খাদ্যদ্রব্য প্রয়োজন আমি আপনার কাছ থেকে কিনব যতদিন আমার প্রতিষ্ঠান থাকবে। আমি চাই আমি যে খাদ্যদ্রব্য গুলো কিনব তার লাভের অংশ থেকে আপনি কিছু পরিমাণ টাকা দিয়ে যাতে আরো বেশি অসহায় ও দরিদ্রের সাহায্য সহযোগিতা করতে পারেন।
কেননা আপনার বেশি বিক্রয় হলে বেশি লাভ হবে, আর আপনি সেই টাকা থেকে বেশি পরিমাণ অসহায় ও দরিদ্রদের সাহায্য সহযোগিতা করতে পারবেন। ব্যবসায়টি অত্যন্ত খুশি হলো। ব্যবসায়ী এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালকের চুক্তি হলো। ব্যবসায়টি মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলেন এবং অত্যন্ত খুশি হলেন।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ গল্পটি আমাদের শেখায় জীবনের সৎ হতে, দানশীল হতে। আমাদের আয়- রোজগার যতটুকুই হোক না কেন একদিন এই সহযোগিতার মাধ্যমে নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের বরকত দেবেন। একদিন আল্লাহ কোন সৎ ব্যক্তির মাধ্যমে নিশ্চয়ই আপনাকে এই সৎ কাজের উদ্দেশ্যে ভালো কোন পর্যায়ে পৌঁছে দিবেন।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোটগল্প ১।। শেয়াল ও সিংহ।।
একটি বনে একটি শিয়াল বাস করতো। সে প্রতিদিন তার খাদ্যের যোগানোর জন্য স্বীকার করতো। একদিন সে সকাল থেকে এক দুপুর পর্যন্ত বসে ছিল ছিল শিকারের আশায় কিন্তু কোন শেখার পাচ্ছিল না। অনেক ক্ষুধার্ত অবস্থায় ফিরে আসার সময় একটি শিকার দেখতে পাই। খুব পরিশ্রম করে শিকারের পিছনে ছুটে ধরতে সক্ষম হয়। যখনই খেতে যাবে এমন সময় বনের রাজা সিংহ এসে হাজির।
শিয়ালের চাইতে সিংহ অনেক বেশি শক্তিশালী সে জোর করে শিয়ালের শিকার ছিনিয়ে নিয়ে খেতে শুরু করে। শিয়াল ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে অনেক দূরে বসে থাকে। কিছুক্ষণ পর ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে এক পা দু পা করে সিংহের কাছে যায়। এরপর সিংহকে বলে আমি জানি তুমি ক্ষুধার্ত ছিলে, তুমি আমার খাবার নিয়েছো আমি মন খারাপ করিনি।
তবে আমি আশা করি তুমি খাবারটি খাওয়ার পর অবশিষ্ট কিছু অংশ আমার জন্য রেখো। সিংহ শিয়ালের সহানুভূতি দেখে শিয়ালের প্রতি তার মায়া হয়। সিংহ শিয়ালকে তার স্বীকার ফিরিয়ে দিয়ে বলে তুমিতো রাগান্বিত হতে পারতে কিন্তু তোমার সহানুভূতি দেখে আমি মুগ্ধ। আমি আর কখনো কোনদিন কারোর শিকার ছিনিয়ে খাব না। এ বলে সিংহ শিয়ালের প্রতি সহানুভূতি দেখে ফিরে যাই।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ আপনি যাকে সহানুভূতি দেখাবেন সে আপনাকে সহানুভূতি দেখাবে। কারোর প্রতি দয়া ও মায়া করলে পরবর্তীতে সেই দয়া মায়া ও ভালোবাসা ফেরত পাওয়া যায়।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প ২।। আলেম ও ধনীব্যক্তি।।
একটি শহরে একজন ধনী ব্যক্তি ছিল, সে প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক ছিল। সব সময় গান বাজনা, আমোদ হুল্লোড় করে মেতে থাকতো। কিন্তু তার মনে কোন শান্তি ছিল না। সে ভাবতো অর্থ সকল সুখের মূল এত অর্থ থাকার পরেও তার মনে শান্তি নেই। একদিন কার সাথে একটি বিজ্ঞ আলেম এর দেখা হল। আলেমকে ধনী ব্যক্তিটি সবকিছু বিষয় খুলে বললেন। আমি অনেক ধনী ব্যক্তি আমার অর্থ সম্পদের অভাব নেই। প্রচুর অর্থ ব্যয় করি কিন্তু কোথাও শান্তি পাই না।
আলেম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি মুসলিম সে উত্তরে বলল না। আলেম তাকে বললেন আপনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করুন আল্লাহ আপনাকে সুখ ও শান্তি দেবেন। ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। লোকটি ও শান্তির আশায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলো। এরপর আলেম তাকে বলল আপনি আমার সাথে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন।
ব্যক্তিটি নিয়মিত আলম এর সাথে মসজিদে নামাজ পড়া শুরু করলাম। এভাবে কিছুদিন ব্যক্তিটি যখন মসজিদে নামাজ পড়তে যেত মসজিদে নিরব শান্তিপূর্ণ মুহূর্তগুলো তার কাছে অনেক পছন্দ হলো। আল্লাহর রহমতে তার জীবনে সুখ ও শান্তি বয়ে আসলো। ধনী ব্যক্তিটি আল্লাহর উপর অনেক শুকরিয়া আদায় করলেন।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ অর্থ ও সম্পদে সুখ নেই যদি আল্লাহ ঐ ব্যক্ত রিজিকে সুখ ও শান্তি না রাখেন। অর্থ থেকে কি লাভ যদি আপনি রোগ আক্রান্ত হন। তাই সকল সুখের মূল ও শান্তির ধর্ম ইসলাম। ইসলাম ধর্মের সকল নিয়মকানুন মেনে চলুন শান্তি আসবে।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প ৩।। ব্যবসায়ীর গল্প।।
একটি বাজারে পাশাপাশি দুইটি ব্যবসায়ী দোকান করতো। একজন ছিল সৎ অন্যদিকে আরেকজন ছিল তার বিপরীত। সৎ ব্যবসায়ী খাদ্যদ্রব্যে কোন ভেজাল মেশাতো না। অন্যদিকে অসৎ ব্যবসায়ী খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশাতো অধিক দামে খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করতো। সৎ ব্যবসায়ীর বেশি বিক্রয় হত অল্প লাভ হতো, তিনি অন্যদের তুলনায় কিছুটা কম দামে বিক্রয় করতেন তাই তার লাভ হতো কম।
অসৎ ব্যবসায়ী অল্প বিক্রয় করতেন কিন্তু বেশি লাভে। আবার দ্রব্যের মধ্যে ভেজাল মিশাতেন তাই তার লাভ বেশি হত। এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকে। সৎ ব্যবসায়ী ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন, তার ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। অল্প লাভে প্রচুর খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করেন তার লাভ হয় প্রচুর। পাশাপাশি অসৎ ব্যবসায়ীর ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
তার দোকানে ক্রেতা নেই বললেই চলে। তিনি খাদ্যে ভেজাল মিশাতেন তার ক্রেতারা ধীরে ধীরে বুঝতে পেরেছে। তিনি অধিক দামে বিক্রয় করেন তা ক্রেতারা বুঝেছে। তাই অসৎ ব্যবসায়ীর দোকানে ক্রেতার তেমন আনাগোনা নেই।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ জীবনে সৎ পথে সততা অর্জন করে ব্যবসা অথবা যেকোনো কিছু করলে ধীরে ধীরে সফলতা বৃদ্ধি হয়। অল্প সময়ে দ্রুত লাভবান হতে চাইলে আগামীতে দ্রুত পতন ঘটে। তাই জীবনে কোন কিছু করার পূর্বে সৎ, নিষ্ঠার সাথে করুন সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প ৪।। দুই বন্ধু।।
একই গ্রামে দুইটি বন্ধু পাশাপাশি থাকতো। তারা সবকিছুই একসাথে করতো তারা দুজনেই ঈমানদার ছিল। কিন্তু একজন ছিল পরিশ্রমী আর অন্যজন ছিল অলস। আল্লাহর প্রতি তাদের প্রচুর বিশ্বাস ছিল। পরিশ্রমী বন্ধু জমিতে ফসল ফালাত, ছাগল পালন করতো, অন্যদিকে অলস বন্ধু শুধু শুয়ে বসে থাকতো। অলস বন্ধু নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে প্রচুর দোয়া করতেন।
আল্লাহ আমাকে রিযিক দিন, আল্লাহ আমাকে অর্থ দিন, আল্লাহ আমাকে সম্পদ দিন, আল্লাহ আমাকে ধন সম্পদের মালিক বানিয়ে দিন। অন্যদিকে পরিশ্রমী নামাজ পড়তো আল্লাহর কাছে দোয়া করত, তার নিজের কাজকর্ম গুলো নিয়মিত করতো। এভাবে বেশ কিছু বছর কেটে যায়। পরিশ্রমী বন্ধু আজ অনেক টাকা পয়সা, অর্থ সম্পদের মালিক, সে এখন ধনী ব্যক্তি হয়ে গেছেন।
অন্যদিকে অলস বন্ধু এতদিন শুধু দোয়ায় করেছেন কিন্তু তার কোন রিজিক বৃদ্ধি হয়নি। টাকা পয়সা অর্থ সম্পদের মালিক হননি। কেননা তিনি অলস প্রকৃতির জীবন যাপন করেছেন পরিশ্রম করতেন না। সাফল্য কিভাবে অর্জন করবেন। আল্লাহ সফলতা অবশ্যই দিবেন কিন্তু তার একটি মাধ্যম প্রয়োজন।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ আপনি রিজিকের জন্য যদি ব্যবস্থা না করেন কখনো রিজিক আসবে না। আপনি পরিশ্রম করুন সফলতা দেওয়ার মালিক আল্লাহ। যদি পরিশ্রম না করেন তাহলে আপনি কিভাবে সফলতা অর্জন করবেন। কোথায় থেকে আপনি ধনসম্পদের মালিক হবেন। তাই প্রত্যেকের উচিত পরিশ্রমের পাশাপাশি এবাদত করা আল্লাহর কাছে চাওয়া নিশ্চয়ই আল্লাহ পরিশ্রমে সফলতা দিবেন।
ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প
অনেকেই চান ইসলামিক অনুপ্রেরণা মূলক গল্প পড়ে সেখান থেকে শিক্ষা অর্জন করতে। ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প গুলো জ্ঞান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।।ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প পড়ে শিক্ষা অর্জন করে বাস্তব জীবনে সফলতা অর্জন করা যায়। পূর্বের ব্যক্তিরা যে বিষয়গুলো অনুসরণ করেছেন সে বিষয় গুলো আমরা বাস্তব জীবনে অনুসরণ করলে তাদের মতো আমরা সফলতা পাব।
তাদের দেখে আমরা উৎসাহিত হলে আমাদের প্রত্যেকের উপকার হবে। অনেকে ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প খোঁজ করেন। তাদের উদ্দেশ্যে নিচে ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প দেওয়া হলঃ
গল্প।। ছোট হাতের বড় দোয়া।।
ছোট্ট এক বালক প্রতিদিন নামাজ পড়তো। তার বাবার সাথে প্রতিদিন মসজিদে যাওয়ার সময় দেখতো রাস্তার ধারে এক গরীব মহিলা বাস করত। কিন্তু তার খাবারের কোন ব্যবস্থা ছিল না। মহিলাটি ছিল অত্যন্ত গরিব। কখনো কখনো না খেয়েও থাকতে হতো। ছোট্ট শিশুটির এ মহিলাকে দেখে মনে কষ্ট হতো। সে প্রতিদিন নামাজ পড়তে গিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতো। আল্লাহ আপনি এই অসহায় দরিদ্র মহিলাটির খাবারের ব্যবস্থা করে দিন।
সে প্রতিনিয়তই এই দোয়া করত। একদিন হঠাৎ করে সে দেখল কোন এক ইসলামী ফাউন্ডেশন দরিদ্র ব্যক্তিদের খাবার দিয়ে সহযোগিতা করছেন। তারা এই গ্রামে তালিকা করছেন এবং মহিলাটিও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে খাবার পেয়েছেন। ছেলেটি খুশি হল। ছেলেটি ভাবল আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেছেন। তাই আমাদের মনে রাখতে হবে হাত ছোট হোক কিন্তু আল্লাহর কাছে দোয়া করলে আল্লাহ সেই বড় দোয়া ও কবুল করেন।
গল্প।। আল্লাহ সব দেখেন।।
একটি শিশু নিয়মিত নামাজ পড়তো। কিন্তু হঠাৎ একদিন খেলার ছলে নামাজ পড়তে ভুলে গিয়েছে। তার দাদী তাকে ডেকে বলল আজকে তুমি নামাজ পড়ো নি? নামাজের সময় তো পেরিয়ে গেছে। সে মিথ্যে কথা বলল হ্যাঁ আমি নামাজ পড়েছি। তার দাদি তাকে বললো আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমরা যা কিছুই করি না কেন তিনি সবকিছুই দেখতে পান।
তাই কখনো মিথ্যা কথা বলা উচিত নয়। শিশুটি তার ভুল বুঝতে পারলো। সে মনে মনে বুঝলো আল্লাহ সবকিছু দেখে মানুষকে মিথ্যা কথা বলে কি হবে তিনি তো সত্যিটা দেখতে পাচ্ছেন। সেদিন থেকে শিশুটি প্রতি ওয়াক্তে দ্রুত নামাজ পড়ে নিত।
গল্প।। এক টাকার সওয়াব।।
একজন ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তিনি খুব একটা দান করতেন না। তার পকেটে অনেক টাকা ছিল। তিনি সেই নোটের টাকা গুলো ভাঙ্গিয়ে দান করতেন না। রাস্তায় দেখলাম একজন ভিখারি বসে আছে। ভিখারি তার কাছে টাকা চাইলো। ব্যক্তিটি তার পকেটে হাত দিয়ে দেখল অনেক টাকা আছে কিন্তু তার মধ্যে খুচরো আছে এক টাকা।
ব্যক্তিটি ভাবল এক টাকা দিয়ে কিছু হয় না এই টাকাটা ভিখারীকে দিয়েদি। ব্যক্তিটি পকেটে হাত দিয়ে এক টাকা বের করে ভিখারী কে দিয়ে দিলো। ভিখারি মন খুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন তার দান করার জন্য। ভিখারিটি দোয়া করে বলল আল্লাহ তোমার জীবন বরকতময় করুক। ব্যক্তিটির চোখে জল চলে আসলো।
সে ভাবল এখন এক টাকা দিয়ে কিছুই পাওয়া যায় না কিন্তু ভিখারিটি আমার জন্য এক টাকায় আল্লাহর কাছে এত বড় দোয়া করলো। ব্যক্তিটি মনে মনে লজ্জিত হলেন এবং সেদিন থেকে অসহায় দরিদ্রদের বেশি বেশি দান করতে শুরু করলেন।
গল্প।। সময়ের মূল্য।।
একটি শিশু প্রতিদিন নামাজ পড়তো। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে খেলাধুলা করতে গিয়ে নামাজের কথা ভুলে গেল। নামাজের সময় পেরিয়ে গেছে। সে বাড়িতে ফিরে আসলো। তার মা তাকে বলল তুমি নামাজ পড়েছ সে উত্তরে বলল না। তুমি কি জানো তুমি যে নামাজ করলে না কখনো এটি ফিরে পাবে না। এই দিনটি চলে গেল এই দিনটি আর কখনোই ফিরে আসবে না।
তাই সময়ের মূল্য দাও, সঠিক সময়ের সদ্ব্যবহার করো। শিশুটি তার ভুল বুঝতে পারলো। তাই সে নিয়মিত সঠিক সময় নামাজ পড়তো। সে আর কখনো নামাজ পড়া বন্ধ করেনি।
প্রিয় পাঠক উপরে বেশ কিছু ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আশা করি এই অনুপ্রেরণামূলক গল্প গুলো আপনাদের পছন্দ হবে। এ গল্প থেকে শিক্ষা নিয়ে বাস্তব জীবনে আশা করি উপকৃত হতে পারবেন।
ইসলামিক শিক্ষনীয় ঘটনা
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প ও ইসলামিক শিক্ষণীয় ঘটনা আমাদের বাস্তব জীবনকে প্রভাবিত করে। জীবনে ইসলামিক জ্ঞান অর্জনের জন্য ইসলামিক শিক্ষনে ঘটনা গুলো প্রত্যেকের জানা প্রয়োজন। নিচে কিছু ইসলামিক শিক্ষনীয় ঘটনায় দেওয়া হলঃ
।। ঈমানদার ব্যক্তি ও গাভি।।
একটি গ্রামে একজন ঈমানদার ব্যক্তি বাস করতেন। তিনি অত্যন্ত গরিব ছিলেন তার সম্পদ বলতে শুধু একটি গাভী ছিল। গাভীর দুধ বিক্রি করতেন তা থেকে যা অর্থ উপার্জন হত তাই দিয়ে নিজের খাবার কিনে দিন পার করতেন। তিনি আল্লাহর উপর বিশ্বাস করতেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। একদিন ওই ব্যক্তিটির একমাত্র সম্বল গাভিটি অসুস্থ হয়ে যাই। বেশ কিছুদিন অসুস্থ থেকেও সুস্থ হয় না। ঈমানদার ব্যক্তিটি পশু চিকিৎসককে ডেকে তার গাভিটি দেখান।
পশু চিকিৎসক বেশ কিছুদিন চিকিৎসা করার পর তিনি ওই ব্যক্তিকে বলেন গাভিটি আর কখনোই সুস্থ হবে না। গাভীদের যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে গাভিটি কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যাবে। গাভীটি যদি কাঁচা ঘাস খায় তাহলে নিয়মিত কাঁচা ঘাস খাওয়ান। যে কয়দিন গাভীটি রিজিক আছে বেঁচে থাকুক। ঈমানদার ব্যক্তিটি অনেক দুঃখ পান তবু ছাড়েন না।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন ও আল্লাহর কাছে গাভীটির জন্য নিয়মিত দোয়া করতেন। দিনের বাকি সময় গাভীটিকে কাঁচা ঘাস এনে খাওয়াতেন। এভাবে কিছুদিন যেতে না যেতেই গাভিটি দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। আগের তুলনায় এখন দ্বিগুণ দুধ দেয়। গ্রামের প্রত্যেকেই অবাক হয়ে যায় কিভাবে এটি সম্ভব হল। তিনি উত্তরে বলেন আমি আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখেছিলাম তিনি অবশ্যই যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
গাভীটি যদি মারাও যেত আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করতাম। গাভীটি এখন বেঁচে আছে তবু আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করি। কেননা আল্লাহ আমার জন্য যা কিছু করেছেন তাই মঙ্গল। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখলে নিশ্চয় তিনি এ বিশ্বাসের মর্যাদা রাখেন। তাই আল্লাহ আমাকে উপহার হিসেবে গাভিটি ফিরিয়ে দিয়েছেন আগের তুলনায় দুধের পরিমাণও বেশি দিয়েছেন।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ আল্লাহর উপর বিশ্বাস করলে আল্লাহ অবশ্যই সফলতা দান করেন। ধৈর্য ধরে যেকোনো কিছু চেষ্টা করুন এবাদত করুন, আল্লাহর কাছে চান নিশ্চয়ই একদিন পাবেন হয়তো কিছুদিন আগে অথবা পরে।
ছোটদের ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প
ছোটদের ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প গুলো ছোটদের জ্ঞান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ইসলামিক গল্প থেকে ধারণা নিয়ে বাস্তব জীবনে অনুসরণ করতে পারে। ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প ছোটদের অনেক পছন্দের। নিচে ছোটদের ইসলামিক শিক্ষণীয় গল্প দেওয়া হলঃ গল্পের নামঃ
।। সঠিক সময়ে সদ্ব্যবহার।।
একটি গ্রামে একটি শিশু বাস করতো। শিশুটি লেখাপড়ায় ও খেলাধুলায় খুব পারদর্শী ছিল। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো কিন্তু কখনো কখনো খেলতে খেলতে নামাজের কথা ভুলে যেতো। তখন আর সেই নামাজটি পড়তো না। একদিন তার বাবা তাকে জিজ্ঞাসা করলো বাবা তুমি নামাজ পড়োনি কেন? সে উত্তরে বলল আমি খেলতে গিয়ে খেলতে খেলতে নামাজের কথা ভুলে গেছি।
আল্লাহ তো অনেক দয়াবান তিনি আমাকে নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দিবেন। তার বাবা মুচকি হেসে বলল তাহলে একটি গল্প বলি শোনো- একটি জঙ্গলে একটি পাখি ছিল। পাখিটি নিয়মিত খাবারের খোঁজে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াত। কিন্তু তার একটি স্বভাব ছিল সে খাবার খাওয়ার পর তোমার মতোই খেলাধুলা করতো। একদিন খাবার খুঁজতে খুঁজতে সে অনেক দূরে পৌঁছে গেল।
খাবার খেয়ে খেলাধুলা করতে করতে তার সন্ধ্যা হয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে রাত্রিতে পরিণত হয় সে ভুলে গিয়েছিল তার বাসাতে ফিরতে হবে। পাখিটি অনেক বিপদে পড়ে যাই এখন সে কোথায় থাকবে কিভাবে বাসায় যাবে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। সে অন্ধকারে কিছু দেখতে পারছিল না। মনে মনে ভাবছিল আজকে যদি আমার বাসায় ফিরতে পারি কখনো আর এরকম খেলাধুলা করব না।
সে অনেক কষ্টে গভীর রাত্রে তার বাসা খুঁজে পেল। সে বাসায় ফিরে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল সে কখনোই আর খেলাধুলা করবে না। সে যদি সঠিক সময়ের ব্যবহার করে বাসায় ফিরে আসত আজকে তার এই পরিণতি হতো না।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ তুমি যদি সঠিক সময়ে সঠিকভাবে না নামাজ আদায় কর তাহলে তুমি তোমার গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবে না। আল্লাহ হয়তো একবার ভুলের জন্য ক্ষমা করবেন কিন্তু বারবার ভুলের জন্য ক্ষমা নাও করতে পারেন। তাই তুমি তোমার নামাজ সঠিক সময়ে আদায় কর।
ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প কাহিনী
নিচে একটি ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প কাহিনী দেওয়া হলোঃ গল্পের নাম- রাগী বন্ধু
।। রাগী বন্ধু।।একদা একটি ব্যবসায়ীর দোকানে দুই বন্ধু কাজ করতো। একজন বন্ধু প্রচন্ড রাগী ছিল। সামান্য কোন ভুল হলেই রেগে যেত মুখে আবোল তাবোল কথা বলতে শুরু করতো। তার অন্য বন্ধুটি একদিন তাকে বলল তুমি কেন এত রাগ করো? সে উত্তরে বলল আমি হঠাৎ কেন রেগে যাই আমি নিজেও জানিনা আমি নিজে রেগে গেলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না।
অন্য বন্ধুটি তাকে বলল রাগ অনেক খারাপ আমি তোমাকে একটি গল্প শোনাই- আমাদের প্রিয় নবী বলেছেন যে রাগের সময় নিজেকে সংযত করতে পারে সে প্রকৃত শক্তিশালী। একদা একজন ব্যক্তি আমাদের প্রিয় নবীর কাছে এসেছিলেন, নবীকে বললেন ইয়া রাসুল আল্লাহ আমাকে এমন কিছু পরামর্শ দিন যা আমার জন্য উপকারী? নবীজী উত্তরে বলেছিলেন তুমি রাগ করোনা,
পুনরায় আবার বললেন অন্য কোন উপদেশ দিন, নবীজি বললেন তুমি রাগ করোনা, ব্যক্তিটি পুনরায় আবার বলল অন্য আরেকটি উপদেশ দিন, নবীজি পুনরায় উত্তরে বললেন রাগ করোনা। এখান থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি রাগ আমাদের জন্য ক্ষতিকর। নবীজি একবার নয় বারবার বলেছেন রাগ করোনা প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এমন ভাবে কয়েকদিন কেটে যায় কাজ করতে করতে অন্য বন্ধুটি কিছু ভুল করলেই রাগী বন্ধুটি রেগে যেত হঠাৎ করে তার প্রিয় নবীজির কথাটি মনে পড়ে যায় রাগ করোনা। তখন সে নিজেকে রাগ থেকে সংযত রাখে। এভাবে সে নিজের রাগকে কন্ট্রোল করতে পারে।
গল্প থেকে শিক্ষাঃ মাধ্যমে আমরা শিখতে পারি রাগ আমাদের জীবনের সবচাইতে ক্ষতির মূল। রাগ ধ্বংস ডেকে আনে আমাদের জীবনের সবকিছু নষ্ট করতে পারে। তাই কখনোই রাগ করা উচিত নয়।
লেখক এর মন্তব্য
ইসলামিক শিক্ষনীয় ছোট গল্প, ইসলামিক শিক্ষনীয় ঘটনা থেকে আমরা জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। ইসলামিক শিক্ষনীয় কাহিনী গুলো থেকে জ্ঞান অর্জন করে আমরা বাস্তব জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারি। এই শিক্ষণীয় গল্পগুলো আমাদের অতীত সম্পর্কে জানতে বুঝতে জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে। আজকের আর্টিকেলটিতে ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প নিয়ে আলোচনা করেছি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।